দাতব্য সংস্থা হল এক ধরনের অলাভজনক সংস্থা। এটি অন্যান্য অলাভজনক সংস্থা থেকে আলাদা কারণ এটি মূলত জনসেবামূলক উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে, পাশাপাশি সামাজিক মঙ্গল (যেমনঃ শিক্ষা, ধর্ম, বা অন্যান্য কার্যক্রম যার লক্ষ্য জনস্বার্থ বা জনসাধারণের ভাল) নিয়েও কাজ করে।
রেলস্টেশনে, রেললাইনের পাশে বস্তিতে, বাসস্ট্যান্ডে, গাছতলায়, ফুটপাথে, শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা দিয়ে কোনো রকম শরীর ঢেকে শুয়ে থাকতে দেখা যায় ছিন্নমূল মানুষ ও পথশিশুদের। একটি উষ্ণ কাপড়ের অভাবে শীতের কষ্ট ভোগ করে রাতযাপন করে থাকে তারা। সামর্থ্যবানদের উচিত অসহায় দরিদ্র মানুষ ও দুর্ভাগা পথশিশুদের পাশে দাঁড়ানো। আপনার একটু আর্থিক সহায়তায় একটু হলেও লাঘব হবে তাদের শীতের কষ্ট। এ মুহূর্তে ধনী, সচ্ছল মানুষের কর্তব্য শীতার্ত, বিপন্ন, অসহায় ও অনাশ্রয় মানুষের পাশে এগিয়ে আসা।
আগেকার দিনে গ্রামাঞ্চলে আম, জাম, লিচু, কাঠাল, পেয়ারা, ছফেদা, লেবু, সুপারি, নারিকেলসহ হরেক প্রজাতির ফল উৎপাদিত হতো। এখন যে পরিমাণ ফল উৎপাদন হয়, তা দিয়ে মানুষের চাহিদাই পূরণ হয় না। কারণ এসব গাছ এখন আর আগের মতো দেখা যায় না। আজকের দিনে শিশু-কিশোরদের কাছে আগেকার দিনের ফল-ফলাদির কথা বললে তারা বিশ্বাসই করতে চায় না। সেই দিন আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য দরকার অধিক হারে বৃক্ষরোপণ। গাছে গাছে, ফুলে-ফলে ভরে উঠুক আমাদের বাড়ির আঙ্গিনা। স্কুল প্রতিষ্ঠানে, বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার পাশে গাছ লাগানোর কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। তাই গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
যে কোনো জাতি গঠনের মূল ভিত্তি শিশু। যারা আজকে শিশু, তারা ভবিষ্যৎ পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে। আদর্শবান শিশুরাই সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার মূল হাতিয়ার। আজকের শিশুকেই গড়ে তুলতে হবে আগামী প্রজন্মের যোগ্য নাগরিক হিসেবে। শিশুর সার্বিক বিকাশ সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দক্ষ নাগরিক হিসেবে শিশুকে গড়ে তোলা সম্ভব। একজন দক্ষ নাগরিকই পারে সুখী, সমৃদ্ধ ও সোনার বাংলা গড়তে।
গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের খেয়েপরে বেঁচে থাকাই তো দায়! আর চিকিৎসা বলতে খুব বেশি হলে বাজারের কোন ফার্মেসি থেকে বড় জোর দুয়েক পাতা ট্যাবলেট। জটিল কোন রোগেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের হাতের ছোঁয়া পায় না তারা। এমবিবিএস ডাক্তার তাদের কাছে যেন এক স্বপ্ন! এমন অসহায় চিকিৎসাবঞ্চিত মানুষদের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে “সর্বজনীন মানবসেবা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা” দেবে বিনামূল্যে চিকিৎসা।
সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দীনদার ধনীদের পক্ষ থেকে গরিব জনগোষ্ঠীর মধ্যে কুরবানী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সবার জন্য কুরবানী প্রকল্পের মাধ্যমে “সর্বজনীন মানবসেবা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা” ধনীদের কুরবানীর একটা অংশ প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা-বঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিকট পৌঁছে দেয়। মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবয়নে সংস্থাটির স্বেচ্ছাসেবীগণ সহয়তা করেন। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে গোশত সংগ্রহ করে ফ্রোজেন গাড়ির মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিবদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
“সর্বজনীন মানবসেবা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা” সচ্ছলদের পক্ষ থেকে এতিম শিশুদের দায়িত্বভার গ্রহণ করে থাকে। তাদের ভরণ-পোষণ এবং উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার যাবতীয় দায়িত্ব দাতার পক্ষ থেকে সংস্থা পালন করে থাকে। সেজন্য সংস্থাটি এতিমদের জন্য স্পন্সরের পক্ষ থেকে উন্নমানের পানাহার, চিকিৎসা এবং পড়াশোনার বন্দোবস্ত করে থাকে।
“সর্বজনীন মানবসেবা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা” এর উদ্যোগে দুস্থ, অসহায় ও এতিমদের মাঝে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দকে ছড়িয়ে দিতে ঈদবস্ত্র উপহার দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে দুঃস্থ, অসহায়, এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদের নতুন কাপড় প্রতিবছর বিতরণ করে আসছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘দয়াবান লোকদের পরম করুণাময় আল্লাহও দয়া করেন। তোমরা জমিনবাসীর প্রতি সদয় হও, আসমানবাসী তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (সুনান আবু দাউদ: হাদীস-৪৯৪১; সুনান তিরমিযী, হাদীস-১৯২৪)
ইফতার ও রামাদান ফুড বিতরণ “সর্বজনীন মানবসেবা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা” এর নিয়মিত কর্মসূচির একটি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভাবী সিয়াম পালনকারীরা যেন রামযান মাসে নির্বিঘ্নে সিয়াম পালন ও ইবাদত-বন্দেগী করতে পারেন, সে লক্ষ্যে তাদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
বিপদের সময় বানভাসি মানুষের সেবায় এগিয়ে এসে প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। বিপদগ্রস্ত লোকেরা সাহায্যের অর্থ, ত্রাণসামগ্রী, খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানি বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে খুবই উপকৃত হয়। যারা অসহায়, ক্ষতিগ্রস্ত, অভাবী, গরিব-দুঃখী এবং অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থানহীন মৌলিক অধিকারবঞ্চিত মানুষকে ত্রাণসাহায্য করে ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন, আল্লাহতায়ালা তাদের প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন।